কাজী নজরুল ইসলাম এর বিদ্রোহী কবিতা

বিদ্রোহী কবিতা

“বিদ্রোহী” কাজী নজরুল ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা এবং বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী সৃষ্টি। কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২২ সালের ৬ জানুয়ারি, কলকাতার বিজলী পত্রিকায়।কবিতাটি তার প্রতিটি পঙ্‌ক্তিতে প্রবল শক্তি, ছন্দ, এবং গতির মাধ্যমে পাঠকদের অভিভূত করে।

এতে কবি নিজেকে কখনো আগুন, কখনো ঝড়, কখনো বজ্র বা সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। “বিদ্রোহী” রচনার সময় ভারত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল। কবিতাটি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির অন্তর্নিহিত দ্রোহ ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে জাগ্রত করে।

“বিদ্রোহী” শুধুমাত্র তৎকালীন বাঙালির জন্য নয়, সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার এক অফুরন্ত উৎস। এর ছন্দময় বাক্যগঠন, অদম্য শক্তির বহিঃপ্রকাশ এবং গভীর অন্তর্নিহিত বার্তা বাংলা সাহিত্যে একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। এটি নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য রত্ন এবং সংগ্রামের প্রতীক।

বিদ্রোহী
কাজী নজরুল ইসলাম

বল বীর –
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর –
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
বল বীর –
আমি চির উন্নত শির!

আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস!
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর,
আমি দুর্বার,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার!
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!
আমি মানি না কো কোন আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!
আমি ধূর্জটি, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর
আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!
বল বীর –
চির-উন্নত মম শির!

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি,
আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’।
আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,
আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ।
আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল,
আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’
পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’
ফিং দিয়া দিই তিন দোল;
আমি চপলা-চপল হিন্দোল।
আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা,
করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা,
আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা!
আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর;
আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর!
বল বীর –
আমি চির উন্নত শির!

আমি চির-দুরন্ত দুর্মদ,
আমি দুর্দম, মম প্রাণের পেয়ালা হর্দম হ্যায় হর্দম ভরপুর মদ।

আমি হোম-শিখা, আমি সাগ্নিক জমদগ্নি,
আমি যজ্ঞ, আমি পুরোহিত, আমি অগ্নি।
আমি সৃষ্টি, আমি ধ্বংস, আমি লোকালয়, আমি শ্মশান,
আমি অবসান, নিশাবসান।
আমি ইন্দ্রাণী-সুত হাতে চাঁদ ভালে সূর্য
মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর রণ-তূর্য;
আমি কৃষ্ন-কন্ঠ, মন্থন-বিষ পিয়া ব্যথা-বারিধীর।
আমি ব্যোমকেশ, ধরি বন্ধন-হারা ধারা গঙ্গোত্রীর।
বল বীর –
চির – উন্নত মম শির!

আমি সন্ন্যাসী, সুর-সৈনিক,
আমি যুবরাজ, মম রাজবেশ ম্লান গৈরিক।
আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস,
আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ!
আমি বজ্র, আমি ঈশান-বিষাণে ওঙ্কার,
আমি ইস্রাফিলের শিঙ্গার মহা হুঙ্কার,
আমি পিণাক-পাণির ডমরু ত্রিশূল, ধর্মরাজের দন্ড,
আমি চক্র ও মহা শঙ্খ, আমি প্রণব-নাদ প্রচন্ড!
আমি ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, বিশ্বামিত্র-শিষ্য,
আমি দাবানল-দাহ, দাহন করিব বিশ্ব।
আমি প্রাণ খোলা হাসি উল্লাস, – আমি সৃষ্টি-বৈরী মহাত্রাস,
আমি মহা প্রলয়ের দ্বাদশ রবির রাহু গ্রাস!
আমি কভূ প্রশান্ত কভূ অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী,
আমি অরুণ খুনের তরুণ, আমি বিধির দর্পহারী!
আমি প্রভোন্জনের উচ্ছ্বাস, আমি বারিধির মহা কল্লোল,
আমি উদ্জ্বল, আমি প্রোজ্জ্জ্বল,
আমি উচ্ছ্বল জল-ছল-ছল, চল-ঊর্মির হিন্দোল-দোল!

আমি বন্ধন-হারা কুমারীর বেণু, তন্বী-নয়নে বহ্ণি
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!
আমি উন্মন মন উদাসীর,
আমি বিধবার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস, হা হুতাশ আমি হুতাশীর।
আমি বন্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের,
আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বিষ – জ্বালা, প্রিয় লান্চিত বুকে গতি ফের
আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়
চিত চুম্বন-চোর কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর!
আমি গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল-ক’রে দেখা অনুখন,
আমি চপল মেয়ের ভালোবাসা, তা’র কাঁকন-চুড়ির কন-কন!
আমি চির-শিশু, চির-কিশোর,
আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচড় কাঁচলি নিচোর!
আমি উত্তর-বায়ু মলয়-অনিল উদাস পূরবী হাওয়া,
আমি পথিক-কবির গভীর রাগিণী, বেণু-বীণে গান গাওয়া।
আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা, আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি
আমি মরু-নির্ঝর ঝর ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়া-ছবি!
আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি, এ কি উন্মাদ আমি উন্মাদ!
আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!

আমি উথ্থান, আমি পতন, আমি অচেতন-চিতে চেতন,
আমি বিশ্ব-তোরণে বৈজয়ন্তী, মানব-বিজয়-কেতন।
ছুটি ঝড়ের মতন করতালি দিয়া
স্বর্গ মর্ত্য-করতলে,
তাজী বোররাক আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার
হিম্মত-হ্রেষা হেঁকে চলে!

আমি বসুধা-বক্ষে আগ্নিয়াদ্রি, বাড়ব-বহ্ণি, কালানল,
আমি পাতালে মাতাল অগ্নি-পাথার-কলরোল-কল-কোলাহল!
আমি তড়িতে চড়িয়া উড়ে চলি জোর তুড়ি দিয়া দিয়া লম্ফ,
আমি ত্রাস সন্চারি ভুবনে সহসা সন্চারি’ ভূমিকম্প।

ধরি বাসুকির ফণা জাপটি’ –
ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনের পাখা সাপটি’।
আমি দেব শিশু, আমি চঞ্চল,
আমি ধৃষ্ট, আমি দাঁত দিয়া ছিঁড়ি বিশ্ব মায়ের অন্চল!
আমি অর্ফিয়াসের বাঁশরী,
মহা- সিন্ধু উতলা ঘুমঘুম
ঘুম চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝঝুম
মম বাঁশরীর তানে পাশরি’
আমি শ্যামের হাতের বাঁশরী।
আমি রুষে উঠি’ যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,
ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া!
আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অখিল ব্যাপিয়া!

আমি শ্রাবণ-প্লাবন-বন্যা,
কভু ধরনীরে করি বরণীয়া, কভু বিপুল ধ্বংস-ধন্যা-
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ণু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা!
আমি অন্যায়, আমি উল্কা, আমি শনি,
আমি ধূমকেতু-জ্বালা, বিষধর কাল-ফণী!
আমি ছিন্নমস্তা চন্ডী, আমি রণদা সর্বনাশী,
আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি!

আমি মৃন্ময়, আমি চিন্ময়,
আমি অজর অমর অক্ষয়, আমি অব্যয়।
আমি মানব দানব দেবতার ভয়,
বিশ্বের আমি চির-দুর্জয়,
জগদীশ্বর-ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,
আমি তাথিয়া তাথিয়া মাথিয়া ফিরি স্বর্গ-পাতাল মর্ত্য!
আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!!
আমি চিনেছি আমারে, আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!!

আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার
নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!
আমি হল বলরাম-স্কন্ধে
আমি উপাড়ি’ ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে।
মহা-বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উত্‍পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না –
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না –
বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।

আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন,
আমি স্রষ্টা-সূদন, শোক-তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!
আমি খেয়ালী-বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!

আমি চির-বিদ্রোহী বীর –
বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির!

কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলা হয় কেন-১

“বিদ্রোহী” কবিতা শুধু সাহিত্য বা কাব্যের সৌন্দর্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি বিপ্লবী বার্তা, যা চিরকালীন মানবমুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। এই কবিতা নজরুলের অমর সৃষ্টি হিসেবে বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদা, সংগ্রামী চেতনা, এবং মুক্তির প্রতীক হয়ে আছে সবার হৃদয়ে।

আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষের তালিকা

বিদ্রোহী কবিতা পিডিএফ ছবি

“বিদ্রোহী” শুধুমাত্র তার সময়ের জন্য নয়, চিরকালীন প্রেরণার উৎস। এটি মানবিক সাম্য, স্বাধীনতা, এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে রচিত, যা আজও প্রাসঙ্গিক। বাঙালির সংগ্রামের ইতিহাসে এই কবিতা একটি ধ্রুপদী সৃষ্টির মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত।

“বিদ্রোহী” একদিকে কাজী নজরুল ইসলামের অদম্য সৃজনশীলতার পরিচায়ক, অন্যদিকে এটি একটি জাতির মুক্তি ও প্রতিরোধের প্রতীক। কবিতাটি তার সময়ের সীমা ছাড়িয়ে একটি চিরন্তন কাব্যিক সৃষ্টি হিসেবে আজও বাঙালির হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

বিদ্রোহী কবিতার ইতিহাস

কাজী নজরুল ইসলামের অমর সৃষ্টি বিদ্রোহী তার বিপ্লবী চেতনার এক অনন্য উদাহরণ। এটি বাংলা সাহিত্যের একটি যুগান্তকারী কবিতা, যা কবির বিদ্রোহী মনোভাব এবং সাহসী চেতনাকে তুলে ধরে। ১৯২১ সালের ডিসেম্বর মাসে, কলকাতার তালতলা লেনের বাসায় বসে তিনি এই কবিতাটি পেন্সিলে লেখেন।

মুজাফফর আহমেদের মতে, “বিদ্রোহী”প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২২ সালের ৬ জানুয়ারি, সাপ্তাহিক বিজলী পত্রিকায়। প্রকাশের পরপরই এটি বাঙালি সমাজে বিপুল সাড়া ফেলে । নজরুলের সাহসী মনোভাব ও সংগ্রামী চেতনা এই কবিতার প্রতিটি পঙ্‌ক্তিতে স্পষ্ট।

“বিদ্রোহী” কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী চেতনাকে চিরস্মরণীয় করেছে। এটি কেবলমাত্র একটি কবিতা নয়, বরং একটি যুগের প্রতীক, যা আজও বাঙালির সংগ্রামী মননে প্রেরণা জোগায়।

কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলা হয় কেন-২

আরো পড়ুন: আল্লাহর ৯৯ নাম আরবি ও বাংলা অর্থসহ ফজিলত

বিদ্রোহী অর্থ কি?
বিদ্রোহী শব্দের অর্থ হলো অবাধ্য, প্রতিবাদী, বা যে ব্যক্তি অন্যায়, শাসন বা শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। এটি একজন এমন ব্যক্তিকে নির্দেশ করে, যিনি অন্যায়কে মেনে নেওয়ার পরিবর্তে এর বিরুদ্ধে দাঁড়ান।

বিদ্রোহী কবিতাটি অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থের কততম কবিতা?

বিদ্রোহী কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থ “অগ্নিবীণা”-র প্রথম কবিতা।

বিদ্রোহী কবিতায় অকাল বৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কিসের?
বিদ্রোহী কবিতায় অকাল বৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কবির নিজের বিদ্রোহী চেতনাএবং অপ্রতিরোধ্য শক্তি-র। এটি শোষণ, অন্যায় এবং দমন নীতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিবাদের প্রতীক।

বিদ্রোহী কবিতা কোন কাব্যের অন্তর্গত?
বিদ্রোহী কবিতা কাজী নজরুল ইসলামের অগ্নিবীণা কাব্যের অন্তর্গত। এটি ১৯২২ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ।

কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলা হয় কেন

কাজী নজরুল ইসলামকে “বিদ্রোহী কবি” বলা হয় তার সাহিত্যকর্ম ও জীবনদর্শনের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত অপরাজেয় বিদ্রোহী চেতনার কারণে। তিনি তার কবিতা, গান, প্রবন্ধ ও ব্যক্তিগত জীবন দিয়ে শোষণ, অত্যাচার এবং কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। কাজী নজরুল ইসলামকে “বিদ্রোহী কবি” বলা হয় তার সাহিত্যকর্ম ও জীবনদর্শনের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত অপরাজেয় বিদ্রোহী চেতনার কারণে। নিচে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বালার কয়েকটি কারন তুলে ধরা হলো-

কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলা হয় কেন-৩

আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানুষ

* তিনি তার কবিতা, গান, প্রবন্ধ ও ব্যক্তিগত জীবন দিয়ে শোষণ, অত্যাচার এবং কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন।

* তার কবিতা ও গানে সমাজের সকল প্রকার শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ছিল।

* তিনি তার লেখনী ও সম্পাদিত “ধূমকেতু” পত্রিকার মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের তীব্র সমালোচনা করেন। এজন্য তাকে কারাবরণও করতে হয়।

* নজরুল ধর্মীয় কুসংস্কার ও গোঁড়ামির কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে ঐক্য ও মানবতার সেতুবন্ধন তৈরির চেষ্টা করেন।

কাজী নজরুল ইসলাম তার সাহিত্যকর্ম ও জীবনে শোষণ, অন্যায়, এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে যেভাবে সংগ্রাম করেছেন, তা তাকে “বিদ্রোহী কবি” উপাধি এনে দিয়েছে।

Share this

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

close button